বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার হওয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্যকে ছাড়িয়ে আনতে থানা ঘেরাও এবং প্রতিবাদ সভা করেছেন তারা। পাশাপাশি দলীয় ওই সদস্যর মুক্তির জন্য বিকাল ৫টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছে মহানগর আওয়ামীলীগ। আজ সোমবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত কাশীপুরে এয়ারপোর্ট থানা ঘেরাও এবং সদর রোড শহীদ সোহেল চত্ত্বরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি অংশ। চাঁদবাজির মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে যাওয়া আওয়ামীলীগ নেতা রিপন বিশ্বাস মহানগর আওয়ামী লীগের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং একই এলাকার বাসিন্দা।
রবিবার (১৬ মে) রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। থানা সূত্রে জানা গেছে, ‘নগরীর কাশীপুর বাজারে ব্যাটারি চালিত অবৈধ ইজিবাইক থেকে আওয়ামী লীগ নেতা রিপন বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিট তুলতো তার সহযোগিরা। বিট আদায় বন্ধ করতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ বরিশাল জেলা কমিটির নেতৃত্বে ‘ইজিবাইক সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করা হয়। কমিটির উপদেষ্টা বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘রিপন বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিট বা চাঁদা দাবি করা হলে আমাদের সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্ব সেটা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এজন্য আমাদের সদস্যদের ওপর হামলা এবং ইজিবাইক ভাংচুর করা হয়।
এই ঘটনায় গত ৩০ মার্চ ইজিবাইক সংগ্রাম কমিটির নেতা গোলাম রসুল বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রিপন বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে ছয় জনকে নামধারী এবং আরও ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি রিপন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে, ‘চাঁদাবাজি এবং হামলার মামলায় রিপন বিশ্বাসকে গ্রেফতারের মহানগর এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তারা রিপন বিশ্বাসকে ছাড়িয়ে আনতে সোমবার বেলা ১২টার দিকে কাশীপুরে এয়ারপোর্ট থানায় যান। পুলিশ তাকে না ছাড়ায় থানা ঘেরাও করেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। পরে সদর রোডে দলীয় কার্যালয়ের ফিরে আসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু’র নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। এসময় বিকাল ৫টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা রিপন বিশ্বাসকে ছেড়ে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন মহানগর নেতৃবৃন্দ। এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার রাজিব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজানুর রহমান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ সমাবেশের নেতৃত্ব দেয়া মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু বলেন, ‘সরকার বিরোধি একটি চক্র আওয়ামীলীগের নেতাকমীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এই চক্রের কিছু নেতা নেতৃরা সরকার দলীয় লোকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত করছে। রিপন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা তারই একটি অংশ মাত্র। তিনি গ্রেফতার হওয়া রিপন বিশ্বাসকে মুক্তি দিতে প্রশাসনকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সময় বেধে দেন।
এ সময়ের মধ্যে রিপন বিশ্বাসকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা। এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশেল এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘চাঁদাবাজি এবং হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাই আমরা শুধুমাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে থানা ঘেরাও এর বিষয়টি অস্বীকার করে ওসি বলেন, ‘দলীয় কিছু লোকজন এসেছিলেন। তারা আমার সাথে কথা বলে চলে গেছে। রিপন বিশ্বাসকে ছাড়া না ছাড়া আদালতের ব্যাপার। এর আগে চলতি বছরের গত ২০ জানুয়ারি নারী শ্রমিককে ইভটিজিংয়ের অপরাধে গ্রেফতার করা হয় মহানগর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগকে আটক করে পুলিশে দেয় শ্রমিকরা।
এ ঘটনার জের ধরে গোটা বরিশাল অচল করে দেয় মহানগর আওয়ামী লীগ। সোহাগকে ছাড়িয়ে আনতে প্রথমে থাকার কাউনিয়া থানা ঘন্টার পর ঘন্টা ঘেরাও করে রাখে। এতেও কাজ না হওয়ায় বরিশাল থেকে সকল রুটে সব ধরনের যানবাহন এমনকি বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের সকল নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেন আওয়ামী লীগ এবং শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা।